আমি কেন মুসলমান?

যে নিজেকে নাস্তিক বলে প্রচার করে তার কিছু প্রশ্ন এবং আমার পক্ষ থেকে উত্তর যারা নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করেন তাদের কাছে প্রশ্ন?

১) আপনি কেন মুসলিম?
২) কোরান যে আল্লাহর বাণী তা আপনি কিভাবে জানলেন/বিশ্বাস করলেন?
৩) মুহাম্মদ সঃ যে শেষ নবী ও আল্লাহর প্রেরিত রসুল তা কিভাবে নিশ্চিত হলেন?

এই তিনটি প্রশ্নের মাঝেই আজকালকার মডারেট মুসলিম নামধারী হাজারো মুনাফেকের মুনাফিকির কারন লুকিয়ে আছে। উত্তর দিতে পারবেন? দেখুনতো আপনি মুসলিম না মুনাফেক?

উত্তরঃ আল্লাহ পাকের প্রশংসা এবং নবী মুহাম্মদ (স:) এর উপর সালাম। প্রথমেই আমি বলে রাখি আমার কথার চেয়ে সুস্টি কর্তা এবং তার মননিত রাসূলের কথার মূল্য বেশি, তাই এই পোস্টে আমি শুধুমাত্র কুরআন এবং সহীহ হাদিস দিয়ে উত্তরগুলো বের করার চেস্টা করবো ইন শা আল্লাহ। আর একটি কারণ হলো Schrodinger's Cat পোস্টের মাধ্যেম মুসলমানদের মুনাফিক বানানোর একটি পায়তারা চলছে, তাই যুক্তি নয় রেফারেন্স দিয়ে উত্তরগুলি দিচ্ছি।

প্রশ্নঃ ১) আপনি কেন মুসলিম?
উত্তর: সাধারণত মানুষ বিভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করে তার পারিবারিক প্রভাবের কারণে, কেউ মুসলমান হয় তার পিতা মুসলমান বলে, কেউ হিন্দু বা খ্রস্টান তার পিতৃ পরিচয়ের কারণে।

দেখে নেই হাদিস কি বলে, প্রতিটি নবজাতকই জন্মলাভ করে ফিতরাতের উপর। এরপর তার মা-বাবা তাকে ইয়াহুদী বা খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজারী রূপে গড়ে তোলে। (বুখারী শরীফঃ ১২৭৫, ১২৭৬, ১৩০২, ৪৪১৩ ইঃফাঃ)

একই কথা আছে পবিত্র কুরআনে, তুমি একনিষ্ঠ ভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহর ফিতরাত, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। (সূরা রুমঃ ৩০)

আর আমার মুসলমান হওয়ার আরো কারণ আছে
০১) ইসলাম ন্যায় বিচার শেখায় কারণ সবাই ন্যায় বিচার পেতে চায়ঃ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্নীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কেই অবগত। (সূরা নিসাঃ ১৩৫)

এই বিষয়ে আরো অনেক আয়াত আছে, যেমন-
সূরা বাকারাঃ ২৮২
সূরা নিসাঃ ৫৪, ৬৫
সূরা মায়দাঃ ৮,৪২
সূরা আন’আমঃ ১৫২
সূরা নাহালঃ ৭৬
সূরা সা’দঃ ২২
সূরা জুমারঃ ৬৯, ৭৫
সূরা আম্বিয়াঃ ৪৭
সূরা আস শুরাঃ ১৫

০২) সকল নবী-রাসূল মুসলমান ছিলেনঃ
এরই ওছিয়ত করেছে ইব্রাহীম তার সন্তানদের এবং ইয়াকুবও যে, হে আমার সন্তানগণ, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এ ধর্মকে মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে কখনও মৃত্যুবরণ করো না। (সূরা বাকারাঃ ‌১৩২)

০৩) মুসলমানদের জন্য আল্লাহই যথেস্টঃ
হে নবী, আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট। (সূরা আনফালঃ ৬৪)

০৫) আল্লাহর কাছে একমাত্র মননিত ধর্ম ইসলামঃ
নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। (সূরা আনআমঃ ১৯)

০৬) আল্লাহ আমাদের নাম মুসলাম রাখেছেনঃ
তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও’’ (সুরা হাজ্জ্বঃ ৭৮)

প্রশ্নঃ ২) কোরান যে আল্লাহর বাণী তা আপনি কিভাবে জানলেন/বিশ্বাস করলেন?
উত্তরঃ আমি সৃস্টি কর্তাকে বিশ্বাস করি তাই তার কিতাবকে বিশ্বাস করি। আর বিশ্বাস ব্যাপারটা সবসময়ই ধারনার উপর নির্ভর করে, যেমন, আপনার মা আপনাকে ভালবাসে, এখানে “ভালবাসাটা” আপনার বিশ্বাস, যেটা ধারনার ফসল। আরো একটি উধাহরণ দিলে পরিস্কার হওয়া যাবে, আপনার বাব যে আসলেই আপনার বাবা এটাও একটি বিশ্বাস। যাইহোক, এটা যে আল্লাহর বানী তার প্রমাণ অনেকবার আল্লাহ পাক নিজেই দিয়েছেন-

০১) প্রমাণঃ
সে (মুহাম্মদ) যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত, তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম, অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা। তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না। এটা খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ। আমি জানি যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মিথ্যারোপ করবে। নিশ্চয় এটা কাফেরদের জন্যে অনুতাপের কারণ। নিশ্চয় এটা নিশ্চিত সত্য।অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ননা করুন। (সূরা হাক্কাহঃ ৪৪-৫২)

০২) প্রমাণঃ
এমনিভাবে আমি সুস্পষ্ট আয়াত রূপে কোরআন নাযিল করেছি এবং আল্লাহ-ই যাকে ইচ্ছা হেদায়েত করেন। (সুরা হাজ্জ্বঃ ১৬)

০৩) প্রমাণঃ
আলিফ-লাম-রা; এটি একটি গ্রন্থ, যা আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি-যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন-পরাক্রান্ত, প্রশংসার যোগ্য পালনকর্তার নির্দেশে তাঁরই পথের দিকে। (সূরা ইবরাহীমঃ ১)

০৪) প্রমাণঃ
বলুন, একে (কুরআন) তিনিই অবতীর্ণ করেছেন, যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য অবগত আছেন। তিনি ক্ষমাশীল, মেহেরবান। (সুরা ফুরকানঃ ৬)

০৫) প্রমাণঃ
বস্তুতঃ যে কোন অবস্থাতেই তুমি থাক এবং কোরআনের যে কোন অংশ থেকেই পাঠ করা কিংবা যে কোন কাজই তোমরা কর অথচ আমি তোমাদের নিকটে উপস্থিত থাকি যখন তোমরা তাতে আত্ননিয়োগ কর। আর তোমার পরওয়ারদেগার থেকে গোপন থাকে না একটি কনাও, না যমীনের এবং না আসমানের। না এর চেয়ে ক্ষুদ্র কোন কিছু আছে, না বড় যা এই প্রকৃষ্ট কিতাবে নেই (সুরা ইউনুসঃ ৬১)

আরো দেখতে পারেন-
সূরা আততারিকঃ ১৩
সূরা কাহাফঃ ১
সুরা নিসাঃ ৮২
সুরা ফুরকানঃ ৩০-৩১
সুরা ত্বা-হাঃ ১১৩
সুরা রা’দঃ ৩৭

প্রশ্ন ৩) মুহাম্মদ সঃ যে শেষ নবী ও আল্লাহর প্রেরিত রসুল তা কিভাবে নিশ্চিত হলেন?
উত্তরঃ এটাও কুরআনে বলা হয়েছে-

০১) নবী (স:) আল্লাহর প্রেরিত রাসূলঃ
আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয়! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন। তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন, তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে, তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না। আর যারা কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন। (সূরা আল ইমরানঃ ১৪৪)

০২) নবী (স:) আল্লাহর প্রেরিত শেষ রাসূলঃ
মুহাম্মদ তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত। (সূরা আহযাবঃ ৪০)

এবার যারা নিজেদের নাস্তিক মনে করেন তাদের কাছে কিছু প্রশ্ন: উত্তরের হিন্সও দিয়ে দিলামঃ
০১) আপনি কেন নাস্তিক?
উত্তরঃ আমরা মুক্তমনা হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেই কিন্তু গুরুদের প্রবন্ধে উৎফুল্ল হয়ে সত্য না খুজে কুতর্ক করি।

০২) আপনি কি সৃস্টি কর্তাকে বিশ্বাস করেন?
উত্তরঃ
ক) সৃস্টি কর্তাকে মানি না।
খ) সৃস্টি কর্তাকে মানি কিন্তু ধর্মকে মানি না।
গ) শংসয়ের মধ্যে আছি।

৩) আপনাদের নৈতিকতার ভিত্তি কি?
উত্তরঃ নৈতিকতার ভিত্তি বিবর্তনবাদ এবং সামাজিক কৃস্টি কালচার (যদিও আমরা নাস্তিকরা সেটাকেও গ্রাহ্য করি না) যদি আপনারা সত্যিকারের নাস্তিক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান তবে এই ৩টি প্রশ্নের সঠিক জবাব দিন। আপনাদের কাছে প্রশ্নগুলোর উত্তর আমার অভিজ্ঞতার ফসল। নাস্তিকদের মধ্যে আবার ৩টি দল যারা সৃস্টি করর্তাকে বিভিন্ন ভাবে বিচার করে, How loll

লক্ষনিওঃ
০১) হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। (সূরা আল ইমরানঃ ১০২)

০২. আপনি অন্ধদেরও তাদের পথভ্রষ্টতা থেকে পথ দেখাতে পারবেন না। আপনি কেবল তাদেরই শোনাতে পারবেন, যারা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে। কারন তারা মুসলমান। (সূরা রুমঃ ৫২)

০৩. কোন সময় কাফেররা আকাঙ্ক্ষা করবে যে, কি চমৎকার হত, যদি তারা মুসলমান হত। (সূরা আল হিজরঃ ২)

বিশেষ ভাবে নজরঃ
যারা ধর্মকে মানে না তারা এই উত্তরে সন্তুষ্ট হবে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন